Select Page

?☟ সুইডেনে গাড়ি কেনা ?♛

May 6, 2021 | জীবন যাপন

এই লেখাটি আমার ব্যক্তিগত ধারনা ভিত্তিক  অভিমত, তাই সব তথ্য  সঠিক নাও হতে পারে। 

সুইডেনে টাকা থাকলে গাড়ি কিনতে পারবেন ,,,এটি সবাই জানেন।  এমনকি টাকা না থাকলেও গাড়ি কিনতে পারবেন ,,,এটিও জানাবো। সাইজ ম্যাটার ,,,মানে গাড়ির আকৃতি নিয়ে সুইডেনে গাড়িকে মোটামুটি এই ভাবে ভাগ করা হয়। 
ছোট কার :  এটির সুইডিশ নাম Småbil বা Halvkombi .  এটির পিছনে মাল নেয়ার তেমন জায়গা নেই।  ছোট গাড়ি হিসেবে তেল খরচ এবং ট্যাক্স কম থাকে।  সবচেয়ে বড় সুবিধা খরচ কম এবং খুব সহজে পার্কিং করা যায়।  
কার :  এটির সুইডিশ নাম Sedan বাংলাদেশের বেশিরভাগ কার এরকম।  পিছনের ঢাকনা খুলে কিছু মাল নেয়া যায়।  খরচ খুব বেশি না। 
লম্বা কার :  এটির সুইডিশ নাম kombi  বাংলাদেশ এরকম গাড়ির সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও সুইডেনে অনেক অনেক বেশি।  পিছন দিক একটু বেশি লম্বা হবার কারন  অনেক বেশি মাল নেয়া যায়।  ৪ জনের সংসারের মোটামুটি ২ সপ্তাহের খাবার কাপড় সব গাড়ির পিছনে তুলে নিতে পারবেন।  ভলবো  V70 সুইডেনের খুব বেশি পরিচিত মডেল ছিল।  আমার মতে ৪ জনের সংসারের জন্য সবচেয়ে ভালো এটি।  খরচ মাঝামাঝি।  একটু বেশি লম্বা হবার কারনে প্যারালাল পার্কিং এর ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হয়।  
জিপ পাজেরো :  আমাদের দেশে এই নামে পরিচিত হলেও সুইডেনে বা অফিসিয়াল নাম হলো SUV. মূলত সব ধরনের রাস্তায় চলার উপযোগী এই গাড়ি গুলিতে বেশ শক্তিশালী মোটর থাকে।  ভেতরে আরাম অনেক বেশি এবং প্রচুর মাল নেয়া যায়।  সমস্যা একটাই ,,,খরচ অনেক বেশি।  এটির একটির খরচ বা দাম দিয়ে আপনি অন্য ক্যাটাগরির ২টি গাড়ি রাখতে পারবেন।  সামর্থ্য থাকলে অবশ্যই ব্যবহার করবেন। 
কিছু কিছু kombi / SUV এ ড্রাইভার সহ মোট ৭ জন বসার সুযোগ থাকে বাকি গাড়ি গুলিতে মোটামুটি ৫ টি সিট্ থাকে। 

গাড়ির শক্তি :সাধারনত ৯০০ সিসি থেকে শুরু করে ৩০০০ সিসি পর্যন্ত মোটর থাকে এরকম গাড়িতে।  যদি দেখেন 1.6 লেখা আছে তাহলে বুঝবেন ১৬০০ সিসি মোটর।  মোটর এর সাইজ বড় হলে গাড়ি শক্তি বেশি থাকে।  এর বাহিরে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোটরের সাইজ কমিয়ে শক্তি বাড়ানো হয়েছে।  ফলে সহজে বোঝার জন্য হর্স পাওয়ার (Hästkrafter) ব্যবহার করা হয়।  ৬০ থেকে শুরু করে ৩৫০ পর্যন্ত হয়। সাধারন ৪ জনের ফ্যামিলি হলে ১০০ হর্স পাওয়ার এর গাড়ি যথেষ্ট বলে আমার মনে হয়েছে। 

তেলপানি নিয়ে নিন :  সুইডেনে গাড়ির তেল নেবার দোকান কে বলে Bensinstation আগে বলা হতো bensinmack  অনেক পুরাতন সুইডিশ কত্থো ভাষায় একে বলে ম্যাক্কে 
  বাংলাদেশে হিসাব করা হয় ১ লিটারে কত কিলোমিটার চলে সেভাবে কিন্তু সুইডেনে গাড়ির তেল খরচ হিসাব করা হয় প্রতি ১০০ কিলোমিটার হিসেবে। অর্থাৎ যদি লেখা থেকে 5,1 liter/100km  তার মানে হলো  ৫ লিটারের একটু বেশি তেল লাগবে ১০০ কিলোমিটার যেতে।  বাস্তবে  গাড়ির সাইজ এবং মোটর ইত্যাদির উপর নির্ভর করে ৫ থেকে ১০ লিটার তেল লাগে ১০০ কিলোমিটার যেতে। সাধারন গাড়ির ৭ লিটারের বেশি তেল লাগে না।  তবে গাড়ির কোম্পানির দেয়া হিসাব বা বিক্রির বিজ্ঞাপন এর হিসাব  বিশ্বাস করবেন না।  

পেট্রোল  : সুইডেনে পেট্রোল  দিয়ে অনেক গাড়ি চলে ,,,এটির সুইডিশ নাম 95,  সাধারনত পেট্রোল পাম্পে এটির হাতলে সবুজ রং দেয়া থাকে।  

ডিজেল : এটির সুইডিশ নাম D,  সাধারনত পেট্রোল পাম্পে এটির হাতলে কালো রং দেয়া থাকে।  
পরিবেশ বান্ধব 1.  সুইডেনে কিছু কিছু প্রেটোল দিয়ে চলা  গাড়ি, পরিবেশ বান্ধব একটি তেল দিয়েও চলে  ,,,এটির সুইডিশ নাম E85,  তুলনামূলক এটির লিটার প্রতি দাম কম হলেও  মাইলেজ কম পাওয়া যায়  ফলে ঘুরে ফিরে কিলোমিটার প্রতি খরচ একই থাকে। প্রায় সব প্রেটোল পাম্পে এটি পাবেন। এটির হাতলে নীল  রং দেয়া থাকে। 
পরিবেশ বান্ধব 2 .   এটি সহজ কথায়  আমাদের দেশের গ্যাসে চলা গাড়ির মত।  সমস্যা হলো সব পাম্পে এটি পাবেন না।  এবং গাড়ির সিলিন্ডার ছোট থাকে ,,,তাই বার বার গ্যাস ভরার ঝামেলা থাকে ,,,এছাড়া এই গাড়ি গুলি বিক্রি করা অনেক কষ্ট। 

পরিবেশ বান্ধব 3.  এটি ইলেকট্রিক বা কারেন্ট দিয়ে চার্জ দিতে হয়।  শপিং মল থেকে শুরু করে নানা জায়গাতে গাড়ি চার্জ করার সুযোগ পাবেন।  ইলেকট্রিক কার সুইডিশে বলে Hybird এর মূলত ২ টি শ্রেণী আছে।  
সাধারন Hybird এটি তে ব্যাটারি চালিত মোটর এর পাশাপাশি পেট্রল এর সুযোগ থাকে।  গাড়ি শুরুতে সীমিত স্পিডে  ব্যাটারিতে কিছু কিলোমিটার চলে এরপর চার্জ শেষ হয়ে গেলে পেট্রল দিয়ে চলতে থাকে।  এগুলিতে চার্জ দেবার ঝামেলা নেই।  দূরপাল্লার ভ্রমন করা যায়।  তবে হালকা গাড়ি হিসেবে ভিতরে আরাম একটু কম বলে আমার মনে হয়েছে।  টয়োটা এর বেশ কয়েকটি গাড়ি আছে এরকম। 
প্লাগ ইন Hybird ১.  এটি তে ব্যাটারি চালিত মোটর এর পাশাপাশি পেট্রল এর সুযোগ থাকে।  এগুলিতে নিয়মিত  চার্জ দিতে হবে। দূরপাল্লার ভ্রমন করা যায়।  তবে হালকা গাড়ি হিসেবে ভিতরে আরাম একটু কম বলে আমার মনে হয়েছে।  
আসল Hybird  বা ইলেকট্রিক গাড়ি : শুধু ব্যাটারিতেই চলে।  তাই নিয়মিত চার্জ দেয়া বাধ্যতামূলক।  প্রায় সব সাইজের এরকম গাড়ি পাবেন।  টেসলা বা ভলভো পলিস্টার  আছে দামি গুলোর মধ্যে ,,,আর কমদামের মধ্যে ভালো  আছে কিয়া নিরো।   ব্যক্তিগত ভাবে আমি ১০০% ইলেকট্রিক গাড়ি পছন্দ করি না ,,,আঙ্গুর ফল টক !

গাড়ি কেনার আগে যেসব জিনিস দেখবেন ?
১. প্রথমেই দেখবেন গাড়িটি সুইডেনের নাকি ইম্পোর্ট করা গাড়ি।  ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে গাড়ির মিটার থেকে অনেক কিছু পরিবর্তন করে এরপর সুইডেনে ইম্পোর্ট করে কিছু গাড়ি।  সেগুলি বাদ  দিতে পারেন।  এগুলিতে প্রায়ই নানা সমস্যা দেখা যায়।  
২. ম্যানুয়াল নাকি অটোমেটিক গিয়ার।  আপনার যদি ম্যানুয়াল ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকে তবে আপনি ম্যানুয়াল  অথবা অটোমেটিক সব গাড়ি চালাতে পারবেন।  আর আপনার যদি অটোমেটিক গাড়ির ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকে তবে আপনি শুধু  অটোমেটিক সব গাড়ি চালাতে পারবেন এবং ম্যানুয়াল পারবেন না।  ধরা খেলে বিপদ।  আমার ব্যক্তিগত পছন্দ ম্যানুয়াল গাড়ি ,,,,এটি চালাতে বেশি ভালো লাগে। 
৩. সুইডেনে গাড়ির চাকা : সাধারণভাবে রাস্তাঘাটে গাড়ি বা কার দেখলে মনে হবে চাকা ৪ টি ,  তবে আসলে মোট চাকা হলো ৯ টি। সুইডেনে ৪ টি চাকা থাকে গ্রীষ্ম কালীন ব্যবহারের জন্য আরো ৪ টি চাকা থাকে (কাটা লাগানো যাতে পিছলে না যায়) শীতকালীন ব্যবহারের জন্য।  ১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত অবশ্যই ব্যবহার করতে হয় শীতের চাকা। একটি চাকা থাকে রিজার্ভ বা আপদ কালীন ব্যাবহারের জন্য। রাস্তাতে চাকা নষ্ট হলে এই  আপদ কালীন চাকা ব্যবহার করা হয়।  অনেক  সময় এটি সাইজে ছোট হয় , শুধু গাড়ি সারাইয়ের দোকান পর্যন্ত যাবার জন্য। সুতরাং সব মিলিয়ে গাড়ির চাকা সংখ্যা হলো ৯ শীতকালীন চাকা আবার ২ ধরনের  হয়,,,কাটা ওয়ালা () আর কাটা ছাড়া।  আমার মতে কাটা ওয়ালা চাকা থাকলে ভালো ,,এতে গাড়ি চালাতে অনেক আরাম হয় ,,,পিছলে যায় না।  তবে সমস্যা হলো অনেক শহরে এটি দিয়ে গাড়ি চালানো নিষেধ ,,,তবে এটি কাগজে কলমে আইন ,, বাস্তবে প্রয়োগ নেই। গাড়ি কেনার আগে সব চাকা আছে কিনা থাকলে  গ্রীপ কেমন আছে ,,এগুলি দেখে নিবেন।  নতুবা নতুন চাকা কিনতে হবে।   

৪. ফিটনেস সার্টিফিকেট:   মোটামুটি  প্রতি বছর রিনিউ করতে হয় , গাড়ি কেনার সময় এটির মেয়াদ দেখে নিবেন।  বছরে যে কোন সময় ইচ্ছা করলে আবার ফিটনেস টেস্ট করিয়ে নিতে পারেন।  প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ ক্রোনোর মত লাগে।  গাড়ি নেবার আগে এটি করিয়ে নিতে পারেন।  
৫. গাড়ির ট্যাক্স  :  গাড়ির ইঞ্জিন , সাইজ ইত্যাদির উপর নির্ভর করে এই ট্যাক্স এর পরিমান।  বর্তমানে ডিজেল গাড়ি গুলিতে ট্যাক্স অনেক বাড়ানো হয়েছে।  মোটামুটি গাড়িভেদে  ৩০০ থেকে ৬০০০ ক্রোনোর বাৎসরিক ট্যাক্স দিতে হয়।  আমার পরামর্শ …সাধারন ভাবে আপনি ২০০০ এর বেশি ট্যাক্স গাড়িগুলি হিসাব থেকে বাদ দিতে পারেন।  
৬. আগের মালিক : একটি নতুন  গাড়ি সাধারনত  একজন সুইডেনে ৩ বছর মত চালায়।  সুতরাং ১০ বছরের পুরাতন একটি গাড়ি যদি ১০ বার মালিকানা বদল হয়ে থাকে ,,,তবে ধরে নিতে পারেন ঐ গাড়িতে সমস্যা আছে।  ৩ থেকে ৫ জনের বেশি মালিকানা বদল হওয়া গাড়ি না কেনাই ভালো।  এছাড়া কিছু দেশের মানুষ খুব খারাপভাবে গাড়ি চালায় ,,,এদের কাছ থেকে দূরে থাকুন। সাধারনত  সুইডিশ বেশিরভাগ বয়স্ক মানুষেরা গাড়ির খুব যত্ন করে ,,,এদের কাছ থেকে নিশ্চিন্তে গাড়ি কিনতে পারেন। 

৭. গাড়ির দাম :  গত ১৪ বছরে আমি ৫ হাজার থেকে শুরু করে ৫ লক্ষ দামের গাড়ি চালিয়েছি।  সাধারন পরিবারের জন্য প্রায় নতুন ধরনের গাড়ি কিনতে চাইলে ১.৫ থেকে ৪ লক্ষ খরচ হবে।  আর মোটামুটি ভালো পুরাতন গাড়ি কিনতে চাইলে ৪০ হাজার থেকে ১.৫ লক্ষ এর মধ্যেই পেয়ে যাবেন।  আর আপনি  গাড়ি বিক্রি করতে চাইলে ,,, সেক্ষেত্রে বলবো ,,,, ভলবো  বা এজাতীয় ব্রান্ডের গাড়ি যে দামেরই হোক খুব সহজে বিক্রি করা যায় ,,,আর ওপেল বা ফোর্ড গাড়ি বিক্রি করা তুলনামূলক অনেক কঠিন।  গাড়ি বিক্রি করার ক্ষেত্রে গাড়ির দামের একটি কাল্পনিক হিসাব এরকম ,,,প্রতি মাসে দাম ১ হাজার কমবে এটি ধরে নিতে পারেন।  অর্থাৎ ১ লক্ষ দিয়ে আজ যে গাড়িটি কিনবেন ৩ বছর পরে অর্থাৎ ৩৬ মাস পরে আপনি বিক্রি দাম ৩৬ হাজার কম পাবেন ,,,, সহজ কথায়  ১ লক্ষ দিয়ে আজ যে গাড়িটি কিনবেন ৩ বছর পরে বিক্রি করতে গেলে ৬৫ হাজারের কাছাকাছি দাম পেতে পারেন। 

৮. টাকায় টাকা : 

দোকান থেকে  গাড়ি কিনতে চাইলে মোটামুটি নিয়ম এরকম।  আপনি গাড়ির দামের কমপক্ষে ২০% পরিশোধ করবেন , এবং বাকি ৮০% গাড়ির ঋণ  নিবেন।  বেশিরভাগ গাড়ির ঋন  এর সুদের হার হয় ৪ থেকে ৫ %. এর বেশি দিলে আপনি ঠকেছেন !  কিছু ক্ষেত্রে বিনা সুদে অথবা ২ % সুদেও কিছু কিছু গাড়ি বিক্রি করে কিছু কোম্পানি।  আপনি চাইলে ২ বা ৫ বা ১০ বছরের জন্য ঋণ  নিতে পারেন।  ঋন  থাকা  অবস্থায় আপনি চাইলে গাড়ি বিক্রি করে দিতে পারবেন ,,,তবে গাড়ি বিক্রির টাকা পাবার সাথে সাথে ঋন  পরিশোধ করতে হবে অথবা নতুন মালিক সরাসরি আপনার ঋন  তার নামে  নিয়ে নিতে পারবে শর্তসাপেক্ষে। 

৯. লিজ নেয়া :  আপনি চাইলে নতুন গাড়ি লিজ নিতে পারেন।  সাধারনত ৩ বছরের জন্য লিজ দেয়া হয়।  এক্ষেত্রে আপনি শুরুতে  কোন টাকা না দিয়েই  লিজ নিতে পারেন ,,,পরে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা দিতে হবে।  লিজ নেবার টাকার মধ্যে  সাধারনত ইন্সুরেন্স এবং অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে।  ৩ বছর পরে চাইলে গাড়িটি ফেরত দিতে পারেন অথবা নিজে কিনে নিতে পারেন।  লিজ এর ক্ষেত্রে ৪ টি বড় সমস্যা : 

i) অনেক ক্ষেত্রেই নিৰ্দিষ্ট কিলোমিটার দিয়ে দেয়া হয় ,,,বছরে এর বেশি গাড়ি চালাতে পারবেন না। 

ii) সুইডেনের বাহিরে গাড়ি নিয়ে যাবার অনেক ক্ষেত্রে অনুমতি থাকে না। 

iii) ৩ বছরের জন্য লিজ নেয়া গাড়ি চাইলে ১ বা ২ বছর পরে ফেরত দেয়া যায় না। 

iv) ব্যাক্তিগত লিজ নিলে যে খরচ ,,,আপনি কোম্পানি হিসেবে লিজ নিলে খরচ প্রায় ২০ থেকে ৪০% কম হয়।  অনেকে শুধু লিজ নেবার জন্য নিজ নামে  কোম্পনি  রেজিস্ট্রেশন করে !!! 

১০. তেল এবং অন্যান্য খরচ।  সুইডেনে গাড়ির তেল খরচ ছাড়াও অন্যান্য খরচ রয়েছে।  যেমন বছরে কমপক্ষে একবার মোবিল / ফিল্টার পাল্টাতে হয় ,,, ২/৩ বছরে একবার ব্রেক সু ইত্যাদি পাল্টাতে হয়।  ১০ থেকে ১৪ হাজার মাইল (সুইডিশ ১ মাইল = ১০ কিলোমিটার!) পর পর ইঞ্জিনের বেল্ট (kamrem) পরিবর্তন করতে হয়।  শীতকালে বেশি কাচ পরিষ্কার করা পানি কিনতে হয়।  ইত্যাদি হিসাব করবেন। 

* My fordon app মোবাইলে রাখতে পারেন ,,এতে চাকা পরিবর্তন করার তারিখ থেকে শুরু করে নানা তথ্য  সময়মত জানিয়ে দিবে 

* Telia Sense কিনতে পারেন ,,,মাসে ৯৯ ক্রোনোর  দিবেন ২৪ মাসের জন্য।  এতে গাড়ির মধ্যে ইন্টারনেট ,,গাড়ি কোথায় আছে ,,সিকিউরিটি ইত্যাদি অনেক কিছু পাবেন।  তবে একটু বুঝে কিনবেন নতুবা ঠকে  যাবেন। 

* ডিজিটাল ই পোস্ট যেমন Kivra ব্যবহার  করুন ,,,তাহলে অনেক শহর এবং ব্রিজ এ যে টোল দিতে হয় ,,সেটি আপনার কাছে ডিজিটালি চলে আসবে ,,ফলে অহেতুক ফাইন দেয়া থেকে বেঁচে যাবেন। 

* অন্যান্য অনেক দেশের মত সুইডেনে সহজে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায় না ,,, এবং সাধারন ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে উবার চালানো যায় না।  

* সুইডেনে গাড়ি কেনার সাথে সাথে ইন্সুরেন্স কেনা বাধ্যতামূলক।  ইন্সুরেন্স না কিনলে অনেক টাকা জরিমানা দিতে হতে পারে।  ইন্সুরেন্স এর দাম.. সুবিধা দেবার শর্ত অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়।  

* নতুন গাড়ি বাদে অন্যান্য যে গ্যারান্টির কথা বিক্রেতা বলবে ,,,বেশিরভাগ ভুয়া।  যেটা নষ্ট হবে বা পাল্টাতে হবে ,,,তখন বলবে এটি ইন্সুরেন্স এর বাহিরে।  এছাড়া যে কোন কিছুতে ইন্সুরেন্স এর টাকা পাবার আগে শুরুতে আপনাকে বেশ কিছু টাকা নিজের পকেট থেকে দিতে হবে ,,,এটির নাম självrisk

* সুইডেনে পার্সন নম্বর আছে এরকম যে কেউ গাড়ি কিনতে পারেন।  আলাদা করে ভিসা বা অন্য কিছু লাগে না ,,,বা আইনি জটিলতা নেই। 

শেষে একটি কথাই  বলি ,,,কোন ভুয়া লাইসেন্স দিয়ে গাড়ি চালাবেন না।  একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না।  আজ আপনি ভুয়া  লাইসেন্স দিয়ে গাড়ি চালালে ,,,কাল আপনাকে দেখে অন্য কেউ ভুয়া লাইসেন্স দিয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে ,,,আপনার খুব কাছের কাউকে আহত বা নিহত করতে পারে।  সাবধানে থাকুন।  

কিছু দরকারি ওয়েব সাইট এর ঠিকানা কমেন্ট এ দিলাম 

যে কোন গাড়ির বেসিক তথ্য  জানার জন্য দেখুন 

https://biluppgifter.se

যে কোন গাড়ির বিস্তারিত তথ্য সরকারি এই ওয়েব সাইট এ পাবেন 

https://fu-regnr.transportstyrelsen.se/extweb/UppgifterAnnatFordon

গাড়ির মালিক কে এটি জানতে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর এস এম এস করতে হবে 72503 নম্বরে।  খরচ ৩ ক্রোনোর। 

নতুন পুরাতন সব গাড়ি বিক্রির  সবচেয়ে বড় ওয়েব সাইট 

https://www.blocket.se

শুধু গাড়ি বিক্রি নিয়ে ওয়েব সাইট 

https://www.bytbil.com/bil

নিলামে গাড়ি কিনতে চাইলে দেখুন 

https://www.kvd.se  (এটি আমার কাছে ভালো লেগেছে )

https://auktion.netbil.se

https://www.wayke.se

আপনার গাড়ি বিক্রি করতে চাইলে অনলাইন এ কত পেতে পারেন এটি দেখুন 

https://www.vikoperdinbil.se

https://www.cardrop.com

সমস্যা হলো এরা  অনলাইন এ একটি দাম দেখাবে ,,,এরপর আপনি সত্যি সত্যি গাড়ি নিয়ে হাজির হলে ,,,তখন অনেক কম দাম বলবে।  তাই এদের এতটুকু বিশ্বাস করবেন না। 

সকল বিষয়