ছাত্র ভিসা নিয়ে সুইডেনে আসার পর কি চাকরি বা ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে সুইডেনে স্থায়ী ভাবে বসবাস করা যায় ? এটি জানতে হলে ,,,গ্রূপের ফাইল সেকশনে “ছাত্র ভিসায় এসে ওয়ার্ক পারমিট আবেদন প্রক্রিয়া” এই ফাইলটি পড়ুন।এবার মূল পোস্ট : ছাত্রের স্পাউস ভিসা থেকে ওয়ার্ক পারমিট কি করা যায় ?উত্তর হলো : সুইডেনে স্পাউস ভিসা থেকে ওয়ার্ক পারমিট করা যায় না। একজন স্পাউসের যতদিন সুইডেনের ভিসা থাকবে , ততদিন বৈধ ভাবে সুইডেনে চাকরি করতে পারবেন। তবে সেটা ওয়ার্ক পারমিট না। এবং “সুইডেনে স্পাউস ভিসা থেকে ওয়ার্ক পারমিট করা যায় না। “কিন্তু অমুক তমুক তো স্পাউস ভিসা নিয়ে সুইডেনে এসেছিলো ,,,এবং এখন ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে আছে ! তাহলে এটি কিভাবে সম্ভব ?উত্তর : সম্ভব। তবে সেটার কাহিনী অনেক দীর্ঘ। ধীরে ধীরে বলতেছি।
ক্যাটাগরি ১ ( বুদ্ধিমান পদ্ধতি ) : “কুলসুম” নিজে ছাত্রী এবং সাথে এসেছিলেন উনার স্বামী “মিজান”। সুতরাং কুলসুমের হলো ছাত্রী ভিসা আর মিজানের হলো স্পাউস ভিসা। হিসাব সহজেই জন্য মনেকরি ২ জনের ভিসার মেয়াদ হলো ১ জানুয়ারি ২০১৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত। মিজান নিজে আই টি সেক্টরের মানুষ। দেশে থাকতেই আন্তর্জাতিক আই টি ফার্মে কাজ করেছেন বেশ কয়েক বছর। ফলে এপ্রিল মাসেই চাকরি পেয়ে যান। মে মাসে অনলাইন এ ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন করেন। তবে মিগ্রাশনসভারকেট জানায় যে ,,সুইডেন থেকে উনাকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দেয়া সম্ভব না , আইন এরকম। ফলে মিজান বাংলাদেশে ফেরত গিয়ে ২ দিনের মধ্যেই নতুন করে ভিসা নিয়ে সুইডেনে ফেরত আসেন। কোনো সমস্যা হয় নাই। এখন উনি সুইডেনে ওয়ার্ক পারমিট ভিসাতে আছেন।
ক্যাটাগরি ২ (অতি বুদ্ধিমান পদ্ধতি ) : “জুলেখা ” নিজে ছাত্রী এবং সাথে এসেছিলেন উনার স্বামী “কুদ্দুস”। সুতরাং জুলেখার হলো ছাত্রী ভিসা আর কুদ্দুসের হলো স্পাউস ভিসা। হিসাব সহজেই জন্য মনেকরি ২ জনের ভিসার মেয়াদ হলো ১ জানুয়ারি ২০১৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত।কুদ্দুস অতি বুদ্ধিমান হলেও সুইডিশ ভাষা না জানার কারণে বহু চেষ্টা করেও কোথাও চাকরি পায় নাই। অবশেষে নভেম্বর মাসে কুদ্দুস একটি রেস্টুরেন্টে কাজ পেলো। এবং সাথে সাথেই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করলো। তবে মিগ্রাশনসভারকেট জানায় যে ,,সুইডেন থেকে উনাকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দেয়া সম্ভব না , আইন এরকম। ফলে ডিসেম্বরে যেহেতু ভিসা শেষ ,,,তাই তাকে বাংলাদেশে ফেরত গিয়ে অপেক্ষা করতে হবে ভিসার জন্য। বউ জুলেখা কে একা রেখেই দেশে ফেরত যায় কুদ্দুস। ৩ মাস পর মাইগ্রেশনসভারকেট তাদের সিদ্ধান্ত দেবার আগে ,,,সেই রেস্টুরেন্টে খোঁজ নেবার জন্য ফোন দিলো। রেস্টুরেন্ট মালিক বললো এতো দিন কারো জন্য অপেক্ষা করা সম্ভব না ,,,তাই কুদ্দুসের জায়গাতে আর একজন কে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই কুদ্দুসের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন গৃহীত হল না। ফলে কুদ্দুস আর সুইডেনে ফেরত আসতে পারলো না ,,,,আর জুলেখাও সুইডেন থেকে নিরুদ্দেশ !
ক্যাটাগরি ৩ (অতিব ধুরন্দর পদ্ধতি ) :
ক ) “রুম্পা” নিজে ছাত্রী এবং সাথে এসেছিলেন উনার স্বামী “এরশাদ”। সুতরাং রুম্পার হলো ছাত্রী ভিসা আর এরশাদের হলো স্পাউস ভিসা। হিসাব সহজেই জন্য মনেকরি ২ জনের ভিসার মেয়াদ হলো ১ জানুয়ারি ২০১৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত। অতিব ধুরন্দর রুম্পা এরশাদ ,,কেউ পড়া লেখার ধার দিয়েও যায় না। বরং জীবনকে “ইনজয়” করে। রুম্পা পাশের বাড়ির সুইডিশ বুড়ার সাথে “গাইড” হিসেবে থাইল্যান্ড ঘুরে আসলো। আর এরশাদ পাশের বাড়ির সুইডিশ বুড়ির সাথে “গাইড” হিসেবে বিভিন্ন শিপে ঘুরে বেড়ায়। কিছুদিন পর রুম্পা পাশের বাড়ির সুইডিশ বুড়ার সাথে এবং এরশাদ পাশের বাড়ির সুইডিশ বুড়ির সাথে “কন্ট্রাক্ট” বিয়ের পেপার রেডি করেছে। আশাকরি খুব শিগ্রী ভিসা পেয়ে যাবে উনারা।
খ) সুইটি নিজে ছাত্রী এবং সাথে এসেছিলেন উনার স্বামী হাবিব। তাদের একটি সন্তান আছে , যে কিছুটা শারীরিক বা মানসিক অসুস্থ্য। বাচ্চাটি যতটা অসুস্থ্য তার থেকেও বেশি অসুস্থ্য হিসেবে দেখায় তাদের বাবা মা। ফলে বাচ্চার দোহাই দিয়ে ,,,নানা কাহিনী করে সুইডেনে থাকার অনুমতি পেয়েছে ,,এই দম্পতি। এখন বাকি সবাইকে নানা উল্টা পাল্টা বুঝায় সুইডেন নিয়ে।
গ) জয়া নিজে ছাত্রী এবং সাথে এসেছিলেন উনার স্বামী ফয়সাল। এসেই নানা ধান্দাবাজি শুরু। ইতিমধ্যে ফয়সাল একটি বার্গার এর দোকানে বাসন মাজার কাজ পায়। অন্যদিকে জয়া কোনো পড়ালেখা করে না বা পারে না ,,মানে হলো ভুয়া ছাত্রী। অনেক চিন্তা করে ,,,২ জনে মিলে সুইডেনে রাজনৈতিক আশ্রয় চায়। এবং তারা জানে যে ,,,, রাজনৈতিক আশ্রয় তারা পাবে না ,,তবে তখন তারা বার্গার এর দোকানে বাসন মাজার কাজ দেখিয়ে ওয়ার্ক পারমিট নিবে। এর বাহিরে আছে ,,,নিজেকে হোমো, গে, লেসবিয়ান নারীবাদী , মুসলিম বিদ্বেষী, ইত্যাদি নানা অজুহাতে সুইডেনে থেকে যাবার কাহিনী।সঙ্গত কারনেই প্রতি নাম কাল্পনিক। কারো সাথে নাম মিলে গেলে সম্পূর্ণ কাক তালীয়।বাংলাদেশের সকল ছাত্র ছাত্রী এই রকম না। অনেক ভাল ভাল মানুষ আছেন। তবে এখানে কিছু উদাহরণ দিয়ে বর্তমান অবস্থার কিছুটা অংশ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।শেষকথা : যারা স্পাউস ভিসা নিয়ে আসবেন ,,, তারা সব দিক জেনে শুনে বুঝে তারপর আসবেন।যাকে বা যাদের বিশ্বাস করেছেন ,,, বিদেশে বিপদে পরলে আপনার পাশে থাকা সেই মানুষটি হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে পারে।