কাগুজে টাকা এবং সুইডেন এবং ই -ক্রোনা
যতদূর মনে পরে ,,,প্রায় এক যুগ আগে সুইডেন সরকার পুরো দুনিয়াকে অবাক করে ঘোষনা দিয়েছিলো যে , সুইডেন হবে দুনিয়ার প্রথম দেশ , যেখানে কাগজের কোন টাকা থাকবে না। এরপর ধীরে ধীরে সুইডেনে চালু ৫/১০/৫০ পয়সা সব বাতিল করে দিলো। ২০১৬ সালে সুইডেনে সব ধরনের কাগজের নোট বাতিল করবে এরকম কথা বললো। তবে বাস্তবে এটি হয় নাই। দফায় দফায় কাগুজে টাকার সময় বাড়ানো হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২০২৩ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত কাগুজে টাকার মেয়াদ চালু আছে।
তবে এর মধ্যে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। সরকারের প্রত্যক্ষ ইশারায় ,,কাগুজে টাকার ব্যবহার অনেক অনেক কমে গেছে। এমনকি সুইডেনের ব্যাংক গুলি কাগুজে নোটের লেনদেন অনেকাংশে বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে অনেক ব্যাংকের শাখা উঠে গেছে বা বন্ধ হয়ে গেছে।
আমরা সুইডেনে বসবাসকারী মানুষজন ব্যাংক কার্ড ব্যবহার করতে বেশি অভ্যস্থ হয়ে গেছি। এখন তো অনেক দোকানে কাগুজে টাকার লেনদেন হয় না।
এছাড়াও কাগুজে টাকার বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন মোবাইল এপ বা এজাতীয় জিনিসের ব্যবহার শুরু হয়েছে। এমনকি হাতে থাকা মোবাইল, ঘড়ি (স্মার্ট ওয়াচ) থেকে শুরু করে আংটি (mikrokort) ইত্যাদি দিয়েও লেনদেন করা সম্ভব হচ্ছে।
কাগুজে টাকার ব্যবহার কমিয়ে সরকার অনেক ধরনের অবৈধ লেনদেন এবং ট্যাক্স ফাঁকি কিছুটা হলেও কমাতে পেরেছে।
ব্যাপারটি সহজ করে বলি , মনেকরুন আপনি চাকরি করেন , আপনার বেতনের টাকা আপনার ব্যাংক একাউন্টে জমা হচ্ছে। সেই টাকা আপনি আপনার ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে খরচ করবেন। এখন যদি আপনি সেই কার্ড নিয়ে দুনিয়ার যে কোন দেশে যান , তবে সেখানে কেনাকাটা করতে পারবেন। বাংলাদেশের মত ডুয়েল কারেন্সি / এন্ডোর্স ইত্যাদি কোন কিছুর ঝামেলা নেই বা অনুমতি লাগে না।
এবার একটু জটিল বিষয় , “বিট কয়েনের” নাম শুনেছেন ? বুঝার সুবিধার জন্য মনে করুন এটি হলো অনলাইনের টাকা পয়সা। যেটার দাম আবার শেয়ার বাজারের মত উঠানামা করে। আরো সহজ করে বলি আজকে আপনি সুইডিশ ক্রোনার দিয়ে যদি আমেরিকান ডলার কিনেন তবে ৩ মাস পরে আবার ডলার কিনতে গেলে ভিন্ন দাম পাবেন।
এইবার এই পোস্টের মূল কাহিনী। সুইডেন সরকার ২০১৬ সালে প্রথম সরকারিভাবে এইরকম অনলাইন ভিত্তিক একটি টাকার কথা চিন্তা শুরু করে। নাম দেয় ই -ক্রোনা। (E-krona)
এরপর ২০১৭ সালে একটি সরকারি রিপোর্ট এবং ২০১৮ সালে আরেকটি রিপোর্ট বের করা হয়। এবং সর্বশেষ ২০২১ সালে এটি চালু করা হবে এরকম একটি সিদ্ধান্ত এর ঘোষনা দেয়া হয়। তবে কবে থেকে এবং কিভাবে এটি চালু হবে সেরকম কোন ঘোষনা দেয়া হয় নাই। বাস্তবে এটি এখনো চালু হয় নাই। ¨
তবে হ্যা কিছু বাটপার ফেসবুকে এবং বিভিন্ন অনলাইনে এই টাকা চালুর মিথ্যা রিপোর্ট করে নানা ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নেয়া শুরু করে দিয়েছে। বাস্তবে পুরোটাই ভুয়া। ফলে বাধ্য হয়ে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি ঘোষনা দিয়ে , সবাইকে এইরকম ভুয়া লেনদেন করতে নিষেধ করেছে। এবং পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছে যে , এই ধরনের লেনদেন কেউ করবেন না , কারন এটি চালু হয় নাই।
“På vissa webbplatser och i sociala medier förekommer det falska uppgifter om att Riksbanken säljer e-kronor.”
সুইডেন প্রবাসী কেউ লোভে পরে বাটপারের খপ্পরে পরে আশাকরি টাকা নষ্ট করবেন না। ভালো থাকুন।